আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে অর্থাৎ দ্বাপর যুগ ও কলিযুগের সন্ধিক্ষণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চপাণ্ডবকে উদ্দেশ্য করে ৫টি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন কলিযুগ সম্পর্কে। আর এই ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল উদ্ভব গীতা গ্রন্থে। বলাই বাহুল্য ঈশ্বরের বাক্য কখনো বিফল হয় না। আর তাই আজ এই ঘোর কলিযুগে এসে সেই পাঁচটি ভবিষ্যৎবাণী মিলে গিয়েছে অক্ষরে অক্ষরে। আপনাদের জন্য আজ তুলে ধরা হল পঞ্চপাণ্ডব ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মধ্যকার সেই ঘটনাটি যার মাধ্যমে কলিযুগ সম্পর্কে চমকে যাওয়ার মত ৫-৫টি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।
সময়টা দ্বাপর যুগের শেষভাগের। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ অতিক্রান্ত হয়েছে বহু বছর। হস্তিনাপুরে পঞ্চপাণ্ডব মিলে রাজত্বও করেছেন বহুকাল। আর অন্যদিকে দরজায় কড়া নাড়ছে ভয়ংকর কলিযুগ। এমনই এক সময় পঞ্চপাণ্ডব একদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করেছিলেন, “হে মাধব, আমরা শুনতে পেয়েছি কলিযুগ আগত প্রায়। কিন্তু কলিযুগের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমরা খুব ভালোভাবে অবগত নই। আপনি দয়া করে আমাদেরকে কলিযুগ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করুন। ”
পাণ্ডবদের অনুরোধ সত্ত্বেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সরাসরি তাদের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করলেন না। বরং তিনি বললেন, হে পাণ্ডুপুত্রগণ, এখন আমি এখান থেকে পাঁচ দিকে পাঁচটি তীর নিক্ষেপ করব। আপনাদের কাজ হবে সেই পাঁচটি তীর কুড়িয়ে নিয়ে আবার আমার কাছে ফিরিয়ে আনা। তবে তীর কুড়িয়ে আনার সময় আপনার চারপাশে কি ঘটছে তা অবলোকন করতে ভুলবেন না। এই পাঁচটি তীর ফিরিয়ে আনার পর আমি আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেব। পাণ্ডবগণ সানন্দে শ্রীকৃষ্ণের কথায় রাজি হলেন এবং শ্রীকৃষ্ণ তার ধনুক দিয়ে পাঁচ দিকে পাঁচটি তীর নিক্ষেপ করলেন। আর এর সাথে সাথে পাণ্ডবগণ বেরিয়ে পড়লেন তীরগুলোকে কুড়িয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য।
অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে পঞ্চপাণ্ডবের প্রত্যেকে একটি করে তীর হাতে নিয়ে ফিরে এলেন শ্রীকৃষ্ণের দরবারে। উৎসুক পাণ্ডবদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবার জেষ্ঠ্য পাণ্ডব যুধিষ্ঠিরকে প্রশ্ন করলেন, “বলুন ভ্রাতা যুধিষ্ঠির, আমার নিক্ষেপিত তীরখানি কুড়িয়ে আনতে গিয়ে আপনি কি কি দেখতে পেলেন?”
যুদ্ধিষ্ঠির উত্তর দিলেন, “হে গোবিন্দ, আমি তীর খুজতে গিয়ে এক অতিশয় সুন্দর হাতিকে দর্শন করেছি। হাতিটি জলাশয়ে দাঁড়িয়ে জলকেলী করছিল। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে হাতিটির শুড় ছিল দুটো। এই ঘটনার সাথে কলিযুগের কি সম্পর্ক?”
মৃদু হেসে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জবাব দিলেন, “হে ধর্মরাজ যুদ্ধিষ্ঠির, আপনি যে দুই শুড় বিশিষ্ট হস্তীটিকে দর্শন করেছেন তা কলিযুগের মানুষের দ্বিচারিতার প্রতীক। কলিযুগের বেশিরিভাগ মানুষ হবে মিথ্যেবাদী এবং স্বার্থপর। তারা মুখে এক কথা বললেও কর্ম ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন থাকবে । অর্থাৎ কথা, প্রতিশ্রুতি এবং কাজের মধ্যে কোন মিল তাদের থাকবে না।”
শ্রীকৃষ্ণের কথা শেষ হওয়ার পরে মধ্যম পাণ্ডব ভীম বললেন, “হে দেবকী নন্দন, আমি যখন আপনার নিক্ষেপিত তীরটি ফিরিয়ে আনার জন্য জঙ্গলে প্রবেশ করেছি তখন আমি এক অতি মনোরম গাভী ও তার বাছুরকে দর্শন করেছি। আমি দেখেছি বাছুরটি পরম তৃপ্তি সহকারে গাভীটির স্তন থেকে মাতৃদুগ্ধ পান করছে। আর গাভীটিও পরম মমতায় তার বাছুরটির শরীর লেহন অর্থাৎ চেটে দিচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মা গাভীটি এত তীব্রভাবে বাছুরের শরীর লেহন করছে যে, তাতে বাছুরটির শরীরের চামড়া ছুলে যাচ্ছে এবং সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এখন আপনিই বলুন কেশব, গোমাতা ও বাছুরের এই কাহিনীর সাথে কলিযুগের কি সম্পর্ক? ”
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আবারও তার সেই ভূবন ভোলানো মৃদু হাসি হেসে বললেন, “ভ্রাতা ভীম, আপনি যে গাভীটিকে দর্শন করেছেন সেটি কলিযুগের মাতাপিতাদের একটি প্রতিকী রূপ। এযুগে পিতামাতা তাদের সন্তানদের প্রতি অন্ধভাবে আসক্ত হয়ে পড়বে। এবং তাদের এই অন্ধ স্নেহ ও তাদের অতিরিক্ত ভালোবাসাই তাদের সন্তানদের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে। এর ফলে সন্তানরা হয়ে উঠবে বিচার বুদ্ধিহীন ও পরনির্ভরশীল এবং একসময় তারা অসৎ পথে গমন করতেও পিছপা হবে না। মোটকথা পিতা মাতার এই অন্ধ স্নেহই আগামীতে সন্তানের স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবন যাপনে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে, মা গাভীটি যেভাবে তার বাছুরটির উপর অতি স্নেহে আসক্ত তেমনি কলিযুগের পিতামাতাদের তাদের সন্তানদের প্রতি আসক্তি এতটাই বেড়ে যাবে যে পিতা মাতা তাদের জীবনের অন্য সব সম্পর্কের প্রতি অন্ধ হয়ে যাবেন।”
ভীমের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন অর্জুনের দিকে। অর্জুন বললেন, “হে মাধব, আপনার নিক্ষেপিত তীর কুড়িয়ে আনতে গিয়ে আমিও এক অদ্ভূত ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। তীর অন্বেষণ করতে করতে আমি নদীর তীর ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় নদীতে ভাসমান একটি দুর্গন্ধযুক্ত মৃতদেহ আমার দৃষ্টিগোচর হয়। আমি দেখতে পাই সেই মৃতদেহের উপরে বসে একটি শকুন সেই মৃতদেহের পচা মাংস খুবলে খুবলে ভক্ষণ করছে। তবে অবাক করার মত ব্যাপার হচ্ছে সেই শকুনটির দুই ডানার উপরে স্পষ্ট অক্ষরে লেখা রয়েছে মহাপবিত্র বেদ মন্ত্র। পরবর্তীতে আমি আপনার নিক্ষেপিত তীরখানি কুড়িয়ে ফেরত এনেছি বৈকি, তবে সেই বীভৎসতাকে ভুলতে পারছি না কিছুতেই। ”
অর্জুনের মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তিনি বললেন, “হে পার্থ, তোমার দেখা ঐ শকুন পক্ষীটি কলিযুগের ভণ্ড সাধকদের একটি প্রতিকী রূপ। কলিযুগে ভণ্ড সাধকের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। এসকল ভণ্ড সাধকদের ধার্মিক, জ্ঞানী ও আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পন্ন হিসেবে জগতে খ্যাতি বিরাজ করবে। তবে তাদের প্রকৃত মানসিকতা হবে শকুনের মত ধূর্ত ও স্বার্থান্বেষী। তারা বাইরে ধার্মিক বেশ ধারণ করবে, ধর্মজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রচার করবে এবং আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন হিসেবে নিজেকে মানুষের কাছে তুলে ধরবে কিন্তু আসলে তারা হবে শাস্ত্রজ্ঞানে অজ্ঞ। তারা ধর্মকে ব্যাবহার করে নিজের জাগতিক স্বার্থ উদ্ধার করবে অন্যদিকে তাদের অনুসারীদেরকে করবে ধর্মভ্রষ্ট। ”
অর্জুনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর চতুর্থ পাণ্ডব নকুল বললেন, “হে যাদবশ্রেষ্ঠ, আপনার নিক্ষেপিত তীর অন্বেষনে গিয়ে আমিও এক অদ্ভূত ঘটনা দর্শন করেছি। তীরের সন্ধানে আমি যখন পাহাড়ের পাদদেশ ধরে সামনের দিকে যাচ্ছিলাম তখন আমি লক্ষ্য করলাম এক প্রকাণ্ড পাথরখণ্ড পাহাড়ের চূড়া থেকে তীব্র বেগে গড়িয়ে সমতলের দিকে ধাবিত হচ্ছে। পাথরখণ্ডটি এতটাই ভারী ছিল যে পাহাড়ের উপরের মোটা গাছগুলোও সেটাকে আটকাতে পারছিল না। বড় বড় গাছে ধাক্কা খাওয়ার পরেও পাথরখণ্ডটির গতি কমছিল না। সবকিছুকে লণ্ডভণ্ড করে পাথরটি প্রচণ্ড গতিতে পাহাড়ের পাদদেশের দিকে এগিয়ে আসছিল। কিন্তু অবশেষে সামান্য একটি লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদের গায়ে এসে পাথরটি এমনভাবে আটকে গেল যে সেটির গতি সেখানেই নিঃশেষ হয়ে যায়। হে যদুকুল শিরোমণি, আমার দেখা পাথরের এই ঘটনাটি কলিযুগের সাথে কিভাবে সম্পর্কযুক্ত তা আমাকে দয়া করে অবগত করুন। ”
উত্তরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নকুলকে বললেন, “হে নকুল, তোমার দেখা ঐ পাথর কলিযুগের মানুষের পাপের প্রতীক। কলিযুগের মানুষের পাপের বোঝা ঠিক ঐরকম পাথরের মত ভারী হবে এবং সেই পাপের কারণে সমস্ত বিশ্বজগৎ লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। তুমি পাথরটিকে যে বড় বড় গাছগুলোর সাথে ধাক্কা খেতে দেখেছ, সেই গাছগুলো হচ্ছে না মত ও পথ। কলিযুগে নানা পথ ও মত বিস্তার লাভ করবে বৈকি তবে সেগুলো মানুষের প্রকাণ্ড পাপের বোঝাকে প্রশমিত করতে পারবে না। তবে তুমি যে লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদে পাথরটিকে আটকে যেতে দেখেছ সেটি হচ্ছে হরিনাম। অর্থাৎ, কলিযুগের একমাত্র আমার শরণাপন্ন হলেই কেবল মানুষ তার পাপের বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারবে। ”
নকুলের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সহদেবকে প্রশ্ন করলেন, “এবার তুমি বল সহদেব, আমার নিক্ষেপিত তীর খুঁজতে গিয়ে তোমার কি অভিজ্ঞতা হল? ”
নকুল বললেন, “হে ভগবান, আপনার ছোড়া তীর খুঁজতে খুঁজতে আমি এক গহীন জঙ্গলে প্রবেশ করেছিলাম। সেখানে আমি হঠাৎ তৃষ্ণার্ত বোধ করি এবং জলের উৎসের সন্ধান করতে থাকি। এক পর্যায়ে আমি দেখতে পেলাম জঙ্গলের গহীনে সারি সারি কুয়া। আমি একটি কুয়া থেকে নিজের তৃষ্ণা নিবারণ করলাম। কিন্তু পরক্ষণেই আমি খেয়াল করলাম সবগুলো কুয়া থেকে জলের ধারা উপচে পড়ছে। কিন্ত একটি কুয়া একেবারেই শুষ্ক ও জলহীন। হে ভগবান, আমার এই অভিজ্ঞতার সাথে কলিযুগের বৈশিষ্ট্যের কি সম্পর্ক রয়েছে তা আমাকে দয়া করে জ্ঞাত করান। ”
শ্রীভগবান বললেন, “হে সহদেব, তোমার দেখা সেই কুয়াগুলো কলিযুগের মানুষের সামাজিক অবস্থান নির্দেশ করছে। কলিযুগে ধনী ও দরিদ্ররা পাশাপাশি অবস্থান করবে বৈকি তবে তাদের মধ্যে পারস্পারিক কোন সৌহার্দ্য থাকবে না। সমাজের কোন দুর্বল বা দরিদ্র মানুষ কখনোই সবল বা ধনীদের কাছ থেকে কোন প্রকার সাহায্য পাবে না। ঠিক যেমন জলপূর্ণ কুয়াগুলোর জল উপচে পড়লেও শুষ্ক কুয়াটি তাদের থেকে একফোঁটা জলও পায়নি, তদ্রুপ সমাজের বিত্তবানরা নানাভাবে তাদের অর্থের অপচয় করলেও অভাবী মানুষকে কখনো সাহায্য করবে না। বরং সুযোগ পেলে তাদেরকে শোষন করতেও ছাড়বে না। ”
তো এই ছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কলিযুগ সম্পর্কে ৫টি ভবিষ্যতবাণী। আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেই ভবিষ্যৎবাণীগুলো আজকের দুনিয়ায় কতটুকু সত্য তা বিচারের ভার আপনাদের উপরেই রইল।
তবে এগুলো ছাড়াও অর্জুনকে গীতার জ্ঞান প্রদান করার সময় কলিযুগ সম্পর্কে তিনি আরো বেশ কিছু ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। শ্রী শ্রী গীতার শেষাংশে কলিযুগ সম্পর্কে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই ভবিষ্যৎবাণীগুলো দেখতে পাওয়া যায়। এবং বলাই বাহুল্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের করা সেই ভবিষ্যৎবাণীগুলোও আজও অক্ষরে অক্ষরে সত্য। কলিযুগ সম্পর্কে তিনি গীতায় বলেছিলেন,
- ধর্ম, সততা, পরিচ্ছন্নতা, সহ্যশক্তি, ক্ষমাশীলতা, আয়ু, শারীরিক ক্ষমতা এবং স্মৃতিশক্তি – সবই কলিযুগে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হৃাস পাবে।
- কলিযুগে অর্থই মানুষের একমাত্র ক্ষমতা হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং আইন ও সুবিচার পাওয়ার সম্ভাবনা আর্থিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করবে।
- এ যুগে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে অর্থ ও যৌনতাই প্রাধান্য পাবে। নারীত্ব ও পুরুষত্ব বলতে একমাত্র যৌন ক্ষমতা বোঝানো হবে। শুধুমাত্র সাদা সুতো গলায় ঝোলালেই একজন ব্রাহ্মণ হিসেবে পরিচিতি পাবে।
- মানুষের মধ্যে ধর্মকে ধারণ করার প্রবণতা চরমভাবে হ্রাস পাবে। বরং এর পরিবর্তে বাড়বে ধর্মের প্রতি বাহ্যিক আড়ম্বর। উপার্জনের পরিমানের নিরিখেই মানুষের শিক্ষা-দীক্ষা বিবেচিত হবে। যে ব্যক্তি ছল-চাতুরি করে হলেও অনেক টাকা রোজগার করতে পারবে, সেই অধিষ্ঠিত হবে সমাজের উচ্চতম পদে।
- কলিযুগে শঠতাকে আর কোনও দোষ হিসেবে দেখা হবে না। কোন ব্যক্তিইর টাকা না থাকলে তিনি যতই গুণবান বা জ্ঞানবান হন না কেন সমাজে তার কোন মূল্য থাকবে না। এযুগে নারী-পুরুষের বিবাহ বন্ধনকে কেবলমাত্র মৌখিক চুক্তি হিসেবে দেখা হবে।
- পৃথিবীর অধিকাংশ ব্যক্তি হবে দুর্নীতিগ্রস্থ এবং তারা ছল-চাতুরির দ্বারা ক্ষমতা দেখিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপত্তি লাভ করবে।
- কলিযুগে ক্রমবর্ধমান খরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এবং মহামারীর প্রকোপে জর্জরিত হবে সাধারণ মানুষ। শাসক কর্তৃক আরোপিত মাত্রারিক্ত করের বোঝার কারনে দরিদ্র মানুষের পক্ষে ক্ষুধার অন্ন জোগানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। কখনও অত্যধিক গরম, কখনও অতিবৃষ্টিতে জীবন বিপন্ন হবে এযুগের মানুষের।
- কলিযুগে নিজের বৃদ্ধ বাবা-মার দায়িত্ব অস্বীকার করবে সন্তান। এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজের পিতা মাতার পরিচয় দিতেও কুণ্ঠা বোধ কবে তারা।
- অতি সামান্য পরিমান অর্থ বা খুব নগণ্য ব্যাপারেও মানুষ মানুষের প্রাণ নিতে দ্বিধাবোধ করবে না এ যুগে। তাছাড়া সামান্য স্বার্থে আঘাত লাগলে, সব পুরনো সম্পর্ক ভুলে মানুষ নিজের অতি আত্মীয়েরও চরম ক্ষতি করতে উদ্যত হবে।