You are currently viewing মহাভারতের চরিত্রগুলো পূর্বজন্মে কে কি ছিলেন? কে কাঁর অবতার? Previous Births of Mahabharat Characters

মহাভারতের চরিত্রগুলো পূর্বজন্মে কে কি ছিলেন? কে কাঁর অবতার? Previous Births of Mahabharat Characters

জানেন কি মহাভারতের শতাধিক চরিত্রগুলোর মধ্যে পূর্বজন্মে কে কি ছিলেন? অথবা কোন চরিত্রটি কোন দেবতার অবতার।? শুধুমাত্র ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নারায়ণের অবতার এবং পঞ্চপাণ্ডবগণ ও কর্ণ হচ্ছেন ৬ জন দেবতার অংশ।  সাধারনত আমাদের জানার গণ্ডি এখানেই এসেই শেষ হয়।  কিন্তু আসলেই কি তাই? কথা দিচ্ছি মহাভারতের এই চরিত্রগুলোর প্রকৃত অতীত ইতিহাস বা পূর্বজন্মের কথা জানলে বিষ্মিত হবেন আপনি।  কারন মহাভারতের এই চরিত্রগুলোর কেউ দেবতাদের অবতার, কেউ বা দেবতাদের অংশ, কেউ বা পূর্বজন্মের অভিশপ্ত, আবার কেউবা পূর্বজন্মের ঋষি, অসুর, অপ্সরা, বসু প্রভৃতি।  সুতারাং, ভিডিওটি তথ্যপূর্ণ মনে হলে আমাদের চ্যানেলটি সাবক্রাইব করে কমেন্টে একবার রাধে রাধে লিখে যাওয়ার অনুরোধ রইল।

 ১. সুভদ্রা, বলরাম, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তার পত্নীগণ।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভগিনী সুভদ্রা ছিলেন দেবী যোগমায়ার অবতার।  তিনিই মধু কৈটভকে বধ করার জন্য শ্রীবিষ্ণুর শরীর থেকে যোগনিদ্রা প্রত্যাহার করেছিলেন, আবার তিনিই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় কারাগারের পরিবেশ মায়াচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন।  এবং যেহেতু এই বৈষ্ণবী মহামায়া ভগবান বিষ্ণুর শক্তির মূর্ত রূপ হিসেবে সর্বদা তার সাথে অবস্থান করেন, সেহেতু তিনিই পরবর্তীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভগিনী সুভদ্রারূপে জন্ম নিয়েছিলেন।  তবে কোন কোন মতে রামায়ণের রাক্ষসী ত্রিজটা পরজন্মে জন্ম নিয়েছিলেন সুভদ্রা রূপে।  অশোক বনে বন্দিনী মাতা সীতাকে রক্ষা করা ও সেবা করার প্রতিদান হিসেবে তিনি পরজন্মে স্বয়ং ভগবানের ভগিনী হিসেবে জন্মলাভ করেছিলেন বলে মান্যতা প্রদান করা হয়।

আবার বলরাম ছিলেন শেষনাগের অবতার।  হ্যাঁ, এনার উপরেই ভগবান বিষ্ণু অনন্ত শয্যায় শায়িত থাকেন।  ত্রেতাযুগে শ্রীবিষ্ণু যখন রাম রূপে অবতার ধারন করেছিলেন তখন লক্ষ্মন হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন শেষনাগ।  একইভাবে দ্বাপর যুগে আবারও শ্রীবিষ্ণুর অবতার শ্রীকৃষ্ণের ভ্রাতা অর্থাৎ বলরাম রূপে জন্ম নিয়েছিলেন শেষনাগ।

মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের পত্নী হিসেবে তার অষ্টভার্যা ও ১৬১০০ পত্নীর উল্লেখ পাওয়া যায়।  এই অষ্টভার্যার মধ্যে মাতা রুক্মিণী ছিলেন দেবী শ্রীলক্ষ্মীর অবতার, মাতা সত্যভামা ছিলেন পূর্বজন্মের গুনবতী।নামক একজন নারী। যিনি একাদশী ব্রত ও কার্ত্তিক ব্রতের ফল হিসেবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে প্রাপ্ত করেছিলেন,  তবে কোন কোন মতে মাতা সত্যভামা হচ্ছেন ভূদেবীর অবতার।  উল্লেখ্য ভূদেবী হচ্ছেন মাতা লক্ষ্মীর একটি রূপ।  আবার মাতা জাম্ববতী ছিলেন দেবী শ্রীলক্ষ্মীর অংশ, মাতা কালিন্দী ছিলেন সূর্যদেবের কন্যা যমুনার অবতার, মাতা মিত্রবৃন্দা ছিলেন বিষ্ণুপত্নী গঙ্গার অবতার, মাতা নগ্নজিতী ছিলেন শ্রীলক্ষ্মীর আরেক রুপ নীলাদেবীর অবতার, মাতা ভদ্রার পূর্বজন্মের কোন তথ্য পাওয়া যায় না এবং মাতা লক্ষ্মনা ছিলেন সত্যভামার মত ভূদেবীর অবতার।  প্রসঙ্গত, নরকাসুরের নিকট থেকে উদ্ধার করা যে ১৬১০০ জন স্ত্রীকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিবাহ করেছিলেন তারা সবাই ছিলেন অপ্সরা।

আরও পড়ুনঃ  শাস্ত্রমতে যে নারীকে বিবাহ করা যাবে না।

. বেদব্যাস, রাজা শান্তনু, সত্যবতী, ভীষ্ম, ধৃতরাষ্ট্র, পাণ্ডু, বিদুর, গান্ধারী, কুন্তি এবং মাদ্রী।

মহাভারতের রচয়িতা মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন দেবব্যাস তার পূর্ববর্তী জন্মে ছিলেন মহর্ষি অপান্তরতমস্।  মহাবিষ্ণু যখন তার নিজের শ্রীমুখ দিয়ে “ভূ” শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন, তখন বিষ্ণুর অংশ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন মহর্ষি অপান্তরতমস্।  সেকারণে বেদব্যাসকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার হিসেবেও মান্যতা প্রদান করা হয়ে থাকে।

আবার রাজা শান্তনু ছিলেন পূর্বজন্মের রাজর্ষি মহাভিষ।  যিনি স্বর্গলাভ করার পরেও দেবী গঙ্গার প্রতি প্রণয়াসক্ত হওয়ার কারনে স্বর্গচ্যুত হয়ে মর্ত্যে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।  অন্যদিকে হরিবংশ পুরাণ থেকে জানা যায়, অচ্ছোদা নামক এক অপ্সরা অভিশপ্ত হয়ে পরজন্মে জন্ম নিয়েছিলেন সত্যবতীরূপে।  আপনারা নিশ্চই স্বর্গের অষ্টবসুর নাম শুনে থাকবেন।  একদা এই অষ্টবসুগণ ঋষি বশিষ্ঠের কামধেনু চুরি করে ধরা পড়েছিলেন হাতেনাতে।  তবে যেহেতু প্রভাষ নামক একজন বসুর প্ররোচনায় বাকী ৭ জন বসু এই হীন কার্য করেছিলেন, তাই প্রভাষকে মর্ত্যলোকে দীর্ঘকাল বাস করার এবং বাকী সাত বসুকে ক্ষণিকের জন্য মর্ত্যে জন্ম নেওয়ার অভিশাপ দিয়েছিলেন ঋষি বশিষ্ঠ।  বলাই বাহুল্য এই আটজন বসুই একে একে জন্ম নিয়েছিলেন রাজা শান্তনুর ঔরসে ও দেবী গঙ্গার গর্ভে।  এই আট সন্তানের প্রথম ৭ জনকেই জন্মের সাথে সাথে জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন গঙ্গা এবং ৮ম সন্তান প্রভাষ মর্ত্যে থেকে গিয়েছিলেন বহুকাল।  এবং এই প্রভাষই প্রথমে দেবব্রত ও পরে ভীষ্ম নামে পরিচিত হয়েছিলেন।

মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র ও মহারাজ পাণ্ডুর পূর্বজন্ম সম্পর্কে মহাভারতের আদিপর্বে কোণ তথ্য না থাকলেও পুরাণ থেকে জানা যায়, গন্ধর্বরাজ হংস ও তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা দুর্বাসার অভিশাপে মর্ত্যে জন্ম নিয়েছিলেন।  গন্ধর্বরাজ হংস জন্মেছিলেন জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্র রূপে এবং তারই কনিষ্ঠ ভ্রাতা শুদ্ধতার দেবতা জন্মেছিলেন পাণ্ডু রূপে।  তবে মহামতি বিদুরের জন্ম হয়েছিল একটু ভিন্নভাবে।  একদা বিনা দোষে মাণ্ডব্য নামক এক মুনিকে শুলে চড়িয়েছিলেন জনৈক রাজা।  কিন্তু বিনা দোষে কেন ঋষিকে এই শাস্তি পেতে হল তা জানার জন্য মাণ্ডব্য গিয়েছিলেন যমরাজের কাছে।  যমরাজ উত্তরে বলেছিলেন, ছোটবেলায় একটি ফড়িঙের শরীরে তীক্ষ্ণ ঘাসের ডগা বিদ্ধ করার অপরাধে মাণ্ডব্য ঋষিকে এই শাস্তি পেতে হয়েছে।  যমরাজের এই উত্তর শুনে বেজায় চটে গিয়েছিলেন ঋষি।  অপরিণত বয়সে একজন অবুঝ বালকের করা অপরাধের এতবড় শাস্তি দেওয়ার জন্য যমরাজের প্রতি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।  সেইসাথে তিনি যমরাজকে অভিশাপ দিয়েছিলেন, অন্যায়ভাবে তার প্রতি শাস্তির বিধান প্রদান করায় যমরাজকে মর্ত্যলোকে শূদ্রযোনী প্রাপ্ত হতে হবে।  আর মাণ্ডব্য ঋষির সেই অভিশাপের ফলেই স্বয়ং যমরাজকে শুদ্র মাতার গর্ভে জন্মাতে হয়েছিল বিদুর রূপে।

আরও পড়ুনঃ  মহাপ্রসাদ কিভাবে এলো পৃথিবীতে?

অন্যদিকে মাতা গান্ধারী ছিলেন দেবীর মতির অবতার, মাতা কুন্তি ছিলেন দেবী সিদ্ধির অবতার এবং মাতা মাদ্রী ছিলেন দেবী ধৃতির অবতার।

৩. পঞ্চপাণ্ডব, ও দ্রৌপদী

পঞ্চপাণ্ডবের পরিচয় দিতে হলে দুইভাবে আমাদেরকে আলোচনা করতে হবে।

১. আপনারা জানেন ঋষি দূর্বাসার প্রদত্ব মন্ত্রবলে পাঁচজন দেবতাকে আহবান করে তাদের অংশ দ্বারা পুত্র জন্ম দিয়েছিলেন মাতা কুন্তি।  প্রসঙ্গত যুধিষ্ঠির ছিলেন ধর্মরাজের অংশ, ভীম ছিলেন পবনদেবের অংশ, অর্জুন ছিলেন দেবরাজ ইন্দ্রের অংশ এবং নকুল ও সহদেব ছিলেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের অংশ।

২. মহাভারতের আদি পর্ব থেকে জানা যায়, পঞ্চপাণ্ডবের প্রত্যেকেই ছিলেন বিভিন্ন মন্বন্তরের দেবরাজ ইন্দ্র।  কি গোলমেলে লাগছে? আসুন বিষয়টা একটু ব্যাখ্যা করা যাক।  আপনারা জানেন, সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলিযুগ মিলিয়ে আমাদের মোট যুগ চারটি।  এই চারটি যুগের সমষ্টিকে বলা হয় মহাযুগ।  এবং ৭১টি মহাযুগের সমষ্টিকে বলা হয় মন্বত্বর।  আপনারা অনেকেই হয়ত জানেন না প্রত্যেক মন্বন্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন একজন মনু, সাতজন ঋষি বা সপ্তর্ষি ও একজন ইন্দ্র।  এবং প্রত্যেক মন্বন্তরে নতুন নতুন মনু, সপ্তর্ষি ও ইন্দ্রগণ দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকেন।  তো মহাভারতে আমরা যে পঞ্চপাণ্ডবের কথা শুনে থাকি তারা আসলে পাঁচজন ইন্দ্রের অবতার।  অর্থাৎ বিশ্বভূক নামক ইন্দ্রদেব জন্ম নিয়েছিলেন যুধিষ্ঠির রূপে, ভূতধামা নামক ইন্দ্রদেব জন্ম নিয়েছিলেন ভীম রূপে, শিবি নামক ইন্দ্রদেব জন্ম নিয়েছিলেন অর্জুন রূপে, শান্তি নামক ইন্দ্রদেব জন্ম নিয়েছিলেন নকুল রূপে এবং তেজস্বী নামক ইন্দ্রদেব জন্ম নিয়েছিলেন সহদেব হিসেবে।

বাকী রইল দ্রৌপদীর কথা।  আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন পঞ্চপাণ্ডব ছিলেন পাঁচ মন্বন্তরের পাঁচজন ইন্দ্র।  আবার প্রত্যেক ইন্দ্রের স্ত্রী হচ্ছেন স্বর্গলক্ষ্মী ইন্দ্রাণী।  এবং প্রত্যেক মন্বন্তরে যেমন ইন্দ্রদেবের পরিবর্তন ঘটে, একইভাবে প্রত্যেক মন্বন্তরে স্বর্গলক্ষ্মী বা ইন্দ্রাণীরও পরিবর্তন ঘটে।  এবং দ্রৌপদী ছিলেন পাঁচটি মন্বন্তরের পাঁচজন স্বর্গলক্ষ্মীর সম্মিলিত রূপ।

৪. এবার আসি কর্ণ ও অর্জুনের পূর্বজন্মের বৃত্তান্তে।

পঞ্চপাণ্ডবদের মধ্যে কর্ণ ও অর্জুনের পূর্বপরিচয় বা পূর্বজন্মের বৃত্তান্ত একটু বেশী বিস্তৃত।  পদ্মপুরাণ বলছে, একদা ব্রহ্মা ও শিবের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছিল।  সেই মনোমালিন্য থেকে ব্রহ্মা সৃষ্টি করেন শ্বেতজ নামের সহস্র কবচ সম্বলিত এক যোদ্ধাকে।  অন্যদিকে ভগবান শিব ও নারায়ণ মিলিতভাবে সৃষ্টি করেন সহস্র বাহুসম্বলিত রক্তজ নামক যোদ্ধাকে।  তবে এই যোদ্ধারা সহস্র বছর যুদ্ধ করেও কেউ কাউকে পরাজিত করতে পারেননি।  অবশেষে ত্রেতাযুগে সূর্যদেবের দায়িত্বে শ্বেতজের জন্ম হয়েছিল সুগ্রীব হিসেব এবং ইন্দ্রদেবের দায়িত্বে রক্তজের জন্ম হয়েছিল বালি হিসবে।

আরও পড়ুনঃ  পঞ্চতত্ত্ব কারা? শ্রীচৈতন্য, নিত্যানন্দ,অদ্বৈতাচার্য, গদাধর,ও শ্রীবাসের আসল পরিচয় || Pancha Tattva

হরিবংশপুরাণ মতে, পরবর্তী জন্মে শেতজ তথা সুগ্রীব জন্মেছিলেন দম্ভোদ্ভব নামক রাক্ষস রূপে।  এবং বালি তথা রক্তজ ভগবান বিষ্ণুর মাধ্যমে দুই অংশে বিক্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন নর-নারায়ণ রূপে।  সবশেষে দ্বাপর যুগে এসে, শ্বেতজ বা সুগ্রীব বা দম্ভোদভব জন্মেছিলেন সূর্যপুত্র কর্ণ হিসেবে এবং  রক্তজ বা বালি বা নর-নারায়ণ পুনর্জন্ম নিয়েছিলেন অর্জুন ও শ্রীকৃষ্ণরূপে।

৫. মহাভারতের পাণ্ডবপক্ষের ও অন্যান্য ইতিবাচক চরিত্রগুলোর পূর্বজন্ম।

মহাভারতের ইতিবাচক চরিত্রগুলোর মধ্যে অভিমন্যু ছিলেন চন্দ্রদেবের পুত্র বর্চস, উপপাণ্ডবগণ ছিলেন বিশ্বদেবের অংশ, শ্রীকৃষ্ণের পুত্র প্রদ্যুম্ন ছিলেন কামদেবের অবতার এবং শ্রীকৃষ্ণের আরেক পুত্র শাম্ব ছিলেন কার্ত্তিকেয়র অবতার। অন্যদিকে দ্রুপদ, সাত্যকী, কৃতবর্মা, এবং বিরাট রাজা ছিলেন মরুতগণের অংশ।  তবে পাণ্ডবদের শ্যালক ও সেনাপতি ধৃষ্ট্যদ্যুম্নকে বলা হয় একলব্যের পূনর্জন্ম বা মতান্তরে অগ্নিদেবের অংশ।

৬. এবার আসি মহাভারতের কৌরব ও অন্যান্য নেতিবাচক চরিত্রগুলোর পূর্বজন্মের কথায়।

দুর্যোধন ছিলেন অসুর কলির অবতার।  একারনে তার মধ্যে কলিযুগের মানুষদের মত বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।  তার মামা শকুনি ছিলেন দ্বাপর অসুরের অংশ।  দ্বাপরযুগের প্রতীক হিসেবে তিনি পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন ধর্মের অবক্ষয় ঘটাতে এবং কলিযুগের আগমন ত্বরান্বিত করতে।  দুর্যোধন ব্যাতীত তার বাকী ভ্রাতারাও ছিলেন পূর্বজন্মের বিভিন্ন অসুর ও রাক্ষস। আবার গুরু দ্রোণাচার্য ছিলেন দেবগুরু বৃহষ্পতির অবতার এবং তার পুত্র অশ্বত্থামা ছিলেন রুদ্রের অবতার বা রুদ্রাংশ।  একইভাবে কৃপাচার্য ছিলেন রুদ্রাংশ বা রুদ্রের অবতার।  মতান্তরে তিনি গুরু বৃহষ্পতির অংশ হিসেবেও বিবেচিত হন।  সিন্ধুরাজ জয়দ্রথ ছিলেন পূর্বজন্মের জম্ভাসুর, উগ্রসেন ছিলেন পূর্বজন্মের অসুর স্বরভানু, কংস ছিলেন পূর্বজন্মের অসুর কালনেমি, জরাসন্ধ ছিলেন পূর্বজন্মের দৈত্য বিপ্রচিত্তি, জরা নামক ব্যাধ ছিলেন রামায়ণের বানর রাজা বালি, ভগদত্ত ছিলেন পূর্বজন্মের দৈত্য বাষ্কল।  প্রসঙ্গত বাষ্কল ছিলেন ভক্ত প্রহল্লাদের কনিষ্ঠ ভ্রাতা।

তবে শিশুপাল ও দন্তবক্রের পূর্বজন্মের ইতিহাস একটু দীর্ঘ।  একদা ভগবান দর্শনে বাধা প্রদান করার জন্য সনতকুমারগণ কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিলেন বৈকুণ্ঠের দুই দ্বার রক্ষক জয় এবং বিজয়।  সনতকুমারগন তাদেরকে দীর্ঘকাল মর্ত্যে জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আবদ্ধ হওয়ার অভিশাপ দিয়েছিলেন।  পরবর্তীতে ভগবান বিষ্ণু তাদের অভিশাপকে কিছুটা প্রশমিত করেন।  তিনি তাদেরকে শর্ত দিয়েছিলেন হয় তোমরা ৭ জন্ম আমার ভক্ত হয়ে জন্মাবে অথবা তোমরা ৩ জন্ম আমার শত্রু হয়ে জন্মাবে এবং আমার হাতেই বধিত হবে।  জয় বিজয় বেছে নিয়েছিলেন পরের শর্তটি। ফলে তারা প্রথম জন্মে হিরণক্ষ্য ও হিরণ্যকশিপু, দ্বিতীয় জন্মে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ এবং তৃতীয় জন্মে শিশুপাল ও দন্তবক্র রূপে জন্ম গ্রহণ করেন।

Rate this post

Leave a Reply