চাণক্য নীতি,চানক্য বাণী,চানক্য নীতি বাংলায়,চানক্য নীতি,চাণক্য,চানক্য নীতি শাস্ত্র,চানক্য শ্লোক,চাণক্যের উপদেশ,চাণক্য বাণী,চাণক্য নীতি কথা,চাণক্য নীতি বাংলা,চাণক্য শ্লোক,চাণক্য পণ্ডিত,চাণক্য নীতি বই,চাণক্য এর জীবনী,চাণক্য নীতি বাণী,চানক্য,চাণক্যের নীতি,চাণক্যের বাণী,সফল হতে চাণক্য নীতি,চাণক্য নীতিশাস্ত্র,চাণক্যের নীতিকথা,চাণক্য নীতি কথা বাংলায়,বিয়ের বিষয়ে চাণক্য বানী,চাণক্যের এই ১০টি নীতি,চার্ণক্য এর জীবনী,মেয়েদের ব্যাপারে চাণক্য নীতি,চানক্য নীতিকথা,চানক্য নীতি কথা
চাণক্য (খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০-২৮৩ অব্দ) ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় গুরু (শিক্ষক), দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা। তিনি প্রাচীন তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির অধ্যাপক ছিলেন। তিনি মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উত্থানে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনিই তরুণ চন্দ্রগুপ্তকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। মৌর্য সাম্রাজ্য ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের নথিভুক্ত ইতিহাসে প্রথম সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য।নিম্নে চাণক্য
পন্ডিতের কিছু অমূল্য বাণী দেওয়া হলো, যে গুলো আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক কাজে লাগবে।
চাণক্য নীতি :
০১. তিনটি বিষয়ে সন্তোষ বিধেয়: নিজের পত্নীতে, ভোজনে এবং
ধনে। কিন্তু অধ্যয়ন, জপ, আর দান এই তিন বিষয়ে যেন
কোনও সন্তোষ না থাকে।
০২. বাল বৃদ্ধ যুবা যেই হোক না অতিথি,
গুরুজ্ঞান তার-ই সেবা গৃহস্থের রীতি
০৩. যারা পরিশ্রমী, তাদের জন্যে কোনকিছুই জয় করা অসাধ্য কিছু
নয়। শিক্ষিত কোন ব্যক্তির জন্যে কোন দেশই বিদেশ নয়।
মিষ্টভাষীদের কোন শত্রু নেই।
০৪. যে রাজা শত্রুর গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা করতে পারে না এবং
শুধু অভিযোগ করে যে তার পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাকে
সিংহাসনচ্যুত করা উচিত
০৫. মনের বাসনাকে দূরীভূত করা উচিত নয়। এই বাসনাগুলোকে
গানের গুঞ্জনের মতো কাজে লাগানো উচিত।
০৬. বিরাট পশুপালের মাঝেও শাবক তার মাকে খুঁজে পায়।
অনুরূপ যে কাজ করে অর্থ সবসময় তাকেই অনুসরণ করে।
০৭. মন খাঁটি হলে পবিত্র স্থানে গমন অর্থহীন
০৮. অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না, মলয়-
পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
০৯. অবহেলায় কর্মনাশ হয়, যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়, যাঞ্চায়
সম্মান-নাশ হয়, দারিদ্র্যে বুদ্ধিনাশ হয়
১০. অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় কালক্ষেপ
এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য
১১. অহংকারের মত শত্রু নেই
১২. আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়, কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতি-
কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়
১৩. আদর দেওয়ার অনেক দোষ, শাসন করার অনেক গুণ, তাই পুত্র
ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার, আদর দেওয়া নয়
১৪. আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রিয়গুলির অসংযম, তাদের জয়
করা হল সম্পদের পথ,যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যায়
১৫. ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়
১৬. উপায়জ্ঞ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য
১৭. উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে
এবং শ্মশানে যে সঙ্গেথাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু
১৮. ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার
বেড়ে যেতে পারে
১৯. একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে
২০. একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভাল। একটি চন্দ্রই
অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না।
২১. কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর
২২. খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয়
২৩. গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে
এমন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ
করতে পারে।
২৪. গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভাল, কারণ
তার কাছে বন আরগৃহে কোনও তফাৎ নেই
২৫. দারিদ্র্য, রোগ, দুঃখ, বন্ধন এবং বিপদ- সব কিছুই মানুষের
নিজেরই অপরাধরূপ বৃক্ষের ফল
২৬. দুর্জনের সংসর্গ ত্যাগ করে সজ্জনের সঙ্গ করবে। অহোরাত্র পুণ্য
করবে, সর্বদ নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।
২৭. দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা,
চোরের মিথ্যাই বল
২৮. দুষ্টা স্ত্রী, প্রবঞ্চক বন্ধু, দুর্মুখ ভৃত্য এবং সর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর
দ্বার, এ-বিষয়ে সংশয় নেই
২৯. ধর্মের চেয়ে ব্যবহারই বড়
৩০. পাপীরা বিক্ষোভের ভয় করে না
৩১. পুত্রকে যারা পড়ান না, সেই পিতামাতা তার শত্রু। হাঁসদের
মধ্যে বক যেমন শোভাপায় না, সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি
শোভা পায় না।
৩২. বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা
কেবল নিজদেশে সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
৩৩. বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ, তা দিয়ে
সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে
না।
৩৪. বিনয়ই সকলের ভূষণ
৩৫. বিষ থেকেও অমৃত আহরণ করা চলে, মলাদি থেকেও স্বর্ণ
আহরণ করা যায়, নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়,
নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়।
৩৬. ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়
৩৭. মিত ভোজনেই স্বাস্থ্যলাভ হয়
৩৮. যশবানের বিনাশ নেই
৩৯. যারা রূপযৌবনসম্পন্ন এবং উচ্চকুলজাত হয়েও বিদ্যাহীন,
তাঁরা সুবাসহীন পলাশ ফুলের মত বেমানান।
৪০. যে অলস, অলব্ধ-লাভ তার হয় না
৪১. যে গাভী দুধ দেয় না, গর্ভ ধারণও করে না, সে গাভী দিয়ে কী
হবে! যে বিদ্বান ও ভক্তিমান নয়, সে পুত্র দিয়ে কী হবে!
৪২. শাস্ত্র অনন্ত, বিদ্যাও প্রচুর। সময় অল্প অথচ বিঘ্ন অনেক। তাই
যা সারভূত তারই চর্চা করা উচিত। হাঁস যেমন জল-মিশ্রিত দুধ
থেকে শুধু দুধটুকুই তুলে নেয়, তেমনি।
৪৩. সুবেশভূষিত মূর্খকে দূর থেকেই দেখতে ভাল, যতক্ষণ সে কথা
না বলে ততক্ষণই তার শোভা, কথা বললেই মূর্খতা প্রকাশ পায়
৪৪. একটি কুবৃক্ষের কোটরের আগুন থেকে যেমন সমস্ত বন
ভস্মীভূত হয়, তেমনি একটি কুপুত্রের দ্বারাও বংশ দগ্ধ হয়
৪৫. অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে
জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না
৪৬. সত্যবাক্য দুর্লভ, হিতকারী-পুত্র দুর্লভ, সমমনস্কা-পত্নী দুর্লভ,
প্রিয়স্বজনও তেমনি দুর্লভ
৪৭. অতি পরিচয়ে দোষ আর ঢাকা থাকে না
৪৮. একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়,
তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়
৪৯. পুত্র যদি হয় গুণবান, পিতামাতার কাছে তা স্বর্গ সমান
৫০. চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু
নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা
বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না
৫১. হাতি থেকে একহাজার হাত দূরে, ঘোড়া থেকে একশ হাত দূরে,
শৃঙ্গধারী প্রাণী থেকে দশহাত দূরে থাকবে। অনুরূপ দুর্জনের কাছ
থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকবে।
৫২. নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন
আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর
হয় না
৫৩. রাতের ভূষণ চাঁদ, নারীর ভূষণ পতি, পৃথিবীর ভূষণ রাজা,
কিন্তু বিদ্যা সবার ভূষণ
৫৪. বিদ্বান সকল গুণের আধার, অজ্ঞ সকল দোষের আকর। তাই
হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
৫৫. সাপ নিষ্ঠুর খলও নিষ্ঠুর, কিন্তু সাপের চেয়ে খল বেশি নিষ্ঠুর।
সাপকে মন্ত্র বা ওষধি দিয়ে বশ করা যায়, কিন্তু খলকে কে বশ
করতে পারে?
৫৬. পরস্ত্রীকে যে মায়ের মত দেখে, অন্যের জিনিসকে যে মূল্যহীন
মনে করে এবং সকল জীবকে যে নিজের মত মনে করে, সে-ই
যথার্থ জ্ঞানী।
৫৭. গুণবানকে আশ্রয় দিলে নির্গুণও গুণী হয়
৫৮. গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায়
না। নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও
তাঁকে সম্মান করেন।
৫৯. বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম।
প্রয়োজন কালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
৬০. বিষ থেকে সুধা, নোংরা স্থান থেকে সোনা, নিচ কারো থেকে
জ্ঞান এবং নিচু পরিবার থেকে শুভলক্ষণা স্ত্রী – এসব গ্রহণ করা
সঙ্গত
৬১. পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি
তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত
আচরণ করবে
৬২. আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়, কিন্তু সামনে ভাল কথা বলে, যার
উপরে মধু কিন্তু অন্তরে বিষ, তাকে পরিত্যাগ করা উচিত
৬৩. বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে
স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
৬৪. বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও
সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
৬৫. অধমেরা ধন চায়, মধ্যমেরা ধন ও মান চায়। উত্তমেরা শুধু
মান চায়। মানই মহতের ধন।
Post Views: 1,357